হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : স্বামীকে মৃত বানিয়ে ১৮ মাস যাবৎ ধরে ‘বিধবা’ ভাতা তুলছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রেহানা বেগম নামের এক নারী। স্বামীকে ‘মৃত’ দেখিয়ে তৎকালীন সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা (সয়দাবাদ ইউনিয়ন সমাজ কর্মী) মেহেদী হাসান অপু তাঁকে এ ভাতার ব্যবস্থা করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বইয়ে শুধু তাঁর বাবার নাম হারুনার রশিদ উল্লেখ করা আছে।
সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিধবা ভাতা পাবেন বিধবা বা স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়া নারীরা। ইউনিয়ন পর্যায়ে বিধবা ভাতার সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রণয়নে কমিটি রয়েছে। সেই তালিকা উপজেলা কমিটিতে পাঠানো হয়। উপজেলা কমিটিতে তালিকা অনুমোদনের পর ভাতা দেয়া হয়। সেই তালিকায় হারুনার রশিদের মেয়ে মোছাঃ আসমা বেগমের নাম তালিকায় রয়েছে।
কিন্তু মোছাঃ আসমা বেগমের স্বামী জীবিত থাকতেও মৃত বানিয়ে এই ভাতা উত্তোলন করে এই টাকা আত্মসাত করেছে তার ছোট বোন রেহানা বেগম। তিনি ১৮ মাসে ৯ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন।
টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মোছাঃ আসমা বেগম বলেন, ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি কোন টাকা পাইনি। তবে আমার ছোট বোন রেহানা বেগম আমার নিকট থেকে আমার ভোটার আইডি কার্ড নিয়েছে। তিনি আরো বলেন আমার স্বামী জীবিত আছে। কিন্তু তার সাথে আমার ছাড়াছাড়ি হয়েছে।
সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নবীদুল ইসলাম বলেন, এই ভাতার কার্ডটি আমাদের ইউনিয়ন থেকে দেওয়া হয়নি। এটা সমাজ সেবা অফিস থেকে তাকে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁর ভাতার বইটি জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি আমি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়কে জানানো হয়েছে।
সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা (সয়দাবাদ ইউনিয়ন সমাজ কর্মী) মেহেদী হাসান অপু বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ভাতার কাডগুলো বিতরণ করা হয়েছে। এসময় ৭০/৮০টি কার্ড বাকি থাকে। পরবর্তীতে সেই কাডগুলো সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আসমা বেগমের কার্ডটি তার ছোন বোন রেহানা বেগম স্বাক্ষর দিয়ে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রেহানা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তোকে পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা জানান, মোছাঃ আসমা বেগম ২০২১-২২ সালে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তবে অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলে তাকে ভাতা প্রদান বন্ধ করা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম রকিবুল হাসান জানান, আমি আপনার মধ্যমে জানতে পরলাম। অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলে তাকে ভাতা প্রদান বন্ধ করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন
বিরামপুরে নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
অবৈধ মাটি উত্তোলনের দায়ে অভিযুক্তকে লাখ টাকা জরিমানা
বগুড়ার শিবগঞ্জে টানা উচ্চ তাপমাত্রার কারণে মরিচ চাষ নিয়ে বিপাকে কৃষক