হোম » সারাদেশ » রৌমারীতে অর্থের অভাবে  পিতা-পুত্রের হচ্ছে না চিকিৎসা

রৌমারীতে অর্থের অভাবে  পিতা-পুত্রের হচ্ছে না চিকিৎসা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: পিতা মো. নুরুল ইসলাম ও পুত্র মো.মামুন মিয়া দুই জনেই পুঙ্গত্ব জীবন যাপন করছেন। কর্মহীন হওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন ছয় সদস্যের একটি পরিবার। চিকিৎসক বলছেন উন্নত চিকিৎসা করা হলে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারবে তারা। তাই পরিবারটি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন মানবতার মা, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে।
গতকাল  বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া (নুরপুরপাড়া) গ্রামের মৃত্যু আবুল হোসেনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৬৯)। তিনি শিক্ষা জীবন শেষ করে ১৯৭৩ সালে স্থানীয় নুরপুর দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসায় চাকুরিতে যোগদান করেন। ওই মাদ্রাসায় সামান্য টাকা বেতন পেতেন। সেই টাকা দিয়ে কোন মতে চলতো তার সংসার। ভাগ্যের কি পরিহাস চাকুরিতে কর্মরত থাকাবস্থায় তার দুই পা অকেজো হয়।
এরপর পা দিয়ে হাটাচলা একেবারে বন্ধ হয়। এ অবস্থায় পরিবারের লোকজনের ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তাকে কুলে করে মাদ্রাসায় নিয়ে যেতেন এবং ছুটি শেষে একইভাবে তাকে বাড়িতে নেওয়া হতো। ২০১১ সালে তিনি চাকুরি থেকে অবসরে যান এবং মাদ্রাসা থেকে এককালিন প্রায় ২ লক্ষাধীক টাকা পায়। এ টাকা দিয়ে তার তিনটি মেয়ের বিবাহ দেওয়া হয়। এতে তার সহায় সম্বল সব শেষ হয়ে যায়।
অপর দিকে সংসারের দায়িত্ব পড়ে তার একমাত্র ছেলে মামন মিয়ার কাছে। সে ঢাকা শহরে দিনমুজুরী কাজ করে যা পায় তা দিয়ে অতিকষ্টে সংসার চলতো তাদের। দেড় বছর আগে কারো সহযোগিতায় ইউনিটি পরিবহনে হেলপার হিসেবে কাজ করেন। এই কাজের বিনিময় মালিক তাকে ৫ থেকে ৭ শত টাকা দিত প্রতিদিন। সে তার শাররিক প্রতিবন্ধি বাবা,বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে অনাহারে অর্ধহারে চলত তার দিন। বছরের বিশেষ কিছু দিনেও ভালো খাবার দিতে পারতো না পরিবার পরিজনের মুখে। এরই মধ্যে নেমে আসে তার ঘরে অন্ধকারের ছায়া।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ভৈয়লর সংলগ্ন রাস্তায় রাত ২ টার দিকে ইউনিটি পরিবহনটি ঢাকা থেকে রৌমারী উদ্যেশে আসতে ছিল। এসময় হেলপার মামন বাসের দরজায় দাড়ানো অবস্থায় অপর দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দিলে সে চলন্ত বাস থেকে রাস্তায় পড়ে এবং একটি পা সম্পর্ণ চুর্ণবিচুর্ণ হয়। এসময় ওই বাসে থাকা স্টাফরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে আহতর অবস্থা আরো অবনতির দিকে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পুঙ্গ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ৩০৫১ নং ইউনিটি পরিবহন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা হাবিবুর রহমান চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তিনি পাত্তাই দিচ্ছেন না। এরই মাধ্যে তাদের হাতে থাকা সহায় সম্বল সব শেষ হয়ে যায়। অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে না পারায় বাড়িতে পুঙ্গত্ব জীবন যাপন করছেন। ওই পরিবারটি অনাহারে অর্ধহারে দিনকাটাছে। সমাজের বিত্তবান ও জনপ্রতিনিধিগণ চিকিৎসার্থে এগিয়ে না আসলে নিঃস্ব হয়ে যাবে পরিবারটি। চিকিৎসকরা বলছেন, উন্নত চিকিৎসা করা হলে পিতা-পুত্র উভয় সুস্থ হয়ে উঠবেন। তাদের যোগাযোগের মাধ্যম ০১৭৬২৪৪২১২২।
শাররিক প্রতিবন্ধি নুরুল ইসলাম স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সমাজের বিত্তবানসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিকিৎসার জন্য আকুতি জানিয়েছেন।
error: Content is protected !!