হোম » সারাদেশ » যৌন হয়রানি বন্ধে কাউন্সিলিং, ধর্ম ও আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ জরুরি

যৌন হয়রানি বন্ধে কাউন্সিলিং, ধর্ম ও আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ জরুরি

নারী ও পুরুষ সৌহার্দপূর্ণ পারস্পরিক সহযোগিতায় মানব সভ্যতার সৃষ্টি। উভয়ের নির্ভরশীলতায় পূর্ণতা পায় একটি সমাজের অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সমৃদ্ধি। নারী সমাজকে বাদ দিয়ে মানব সমাজের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। দেশের পুরুষদের পাশাপাশি শিক্ষা-জ্ঞানে পিছিনে নেই নারী সমাজ।

বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কুসংস্কার কাটিয়ে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রায় সমন্বয় করছে নারী সমাজ। তবে এই অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে যৌন নির্যাতন ও ইভটিজিং মতো বিষয়গুলো। বিশেষ করে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির ঘটনা অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে চলেছে। যা নারী শিক্ষা ও তাদের জীবনযাত্রায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় অংশগ্রহণকারি নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯৪% পুরুষ শিক্ষার্থী দ্বারা বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং ১৯ শতাংশ শিক্ষক এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাবেক শিক্ষার্থীও জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়(১)। এই সংখ্যা থেকেই দেশের সামগ্রিক চিত্র অনুমান করে নেয়া যায়। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীর যৌন হয়রানির ঘটনা আমাদের জানান দেয় যে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী শিক্ষার্থীরা কতটুকু নিরাপদ!

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি বন্ধে সন্তানের উপর পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ ও নিজ নিজ ধর্মের অনুশাসন সঠিকভাবে পালনের তাগিদ জরুরি। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামাজিক আন্দোলন, পর্যাপ্ত বিনোদন-খেলাধুলার পরিবেশ, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পরামর্শ কেন্দ্র চালু,  সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানী দ্বারা শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত কাউন্সেলিং জরুরি। পাশাপাশি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সুনির্দিষ্ট যৌন হয়রানির আইন থাকতে হবে, যা কাজ করবে হয়রানি রোধে। ক্যাম্পাসে সচেতনতা সৃষ্টি ও সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সবখানে আইন দ্বারা প্রতিরোধ ও প্রতিকার কমিটি গঠন করতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত হতে পারে সে লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নীতিনির্ধারকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

error: Content is protected !!