হোম » সারাদেশ » বগুড়ার শেরপুরে বাদির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ                                                                                          

বগুড়ার শেরপুরে বাদির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ                                                                                          

এম,এ রাশেদ,বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে খন্দকারটোলায় দুই বছর আগের হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামীরা জামিন নিয়ে এসে হত্যা মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগসহ বাদির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ৯ জানুয়ারী রোববার দুপুরে শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
আসাদুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামীদের পুনরায় জেল হাজতে আটক রেখে প্রচলিত আইনে সাজাসহ আসামীদের দায়ের করা মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রীসহ ভূক্তভোগী পরিবার।
নিহত আসাদুলের স্ত্রী মনজেরা বেগম তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২০২০ সালের ৮ আগস্ট বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলার আইসক্রীম বিক্রেতা আসাদুল ইসলাম খুন হন। এ ঘটনায় এলাকায় চিহ্নিত দুস্কৃতিকারী জিল্লুর রহমান, মোছা. আছফুল বেগম, শাহিনুর ইসলাম, মোস্তাফিজার রহমান, আলাউদ্দিন, সোহাগ হোসেন, মো. নুরুন্নবী, বেল্লাল হোসেন, মোছা. জোবেদা, ইলিয়াসসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩০২/৫০৬/১৪৯ পেনাল কোড ১৮৬০ দন্ডবিধিতে মামলা দায়ের করে নিহত আসাদুল ইসলামের স্ত্রী মনজেরা বেগম। মামলাটি তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে তৎকালীন সময়ের শেরপুর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, ওসি মিজানুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ মামলার চার্জসিট আদালতে প্রেরণ করেন। বতর্মানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
পরবর্তীতে এজাহারভূক্ত আসামীদের থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এবং আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে কারাগারে যায়। এজাহারভূক্ত আসামীরা জামিন নিয়ে এসে হত্যা মামলা বাদি ও স্বাক্ষীসহ আমাদের পরিবারের লোকজনদেরকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা ঘুষ দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে আমরা তাদের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় ওইসব চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হত্যা মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকী-ধামকীসহ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
এদিকে হত্যা মামলায় প্রধান আসামী জিল্লুর রহমান গত ২০২১ সালের ১০ মার্চ থেকে জেল-হাজতে থাকার পর  তার স্ত্রী সেলিনা বেগম  বাদি হয়ে বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে গত ২৫/০১/২০২১ তারিখে মামলা নং ৫৭ সি/২০২১ দায়ের করেন। এ মামলায় বাড়িঘর ভাংচুর, আসবাবপত্র ভাংচুর, নগদ অর্থ লোপাটসহ নানা মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার ভাই জয়নাল আবেদীন ও মো. মন্টু মিয়াসহ ৭/৮জনকে আসামী করেন।
অপরদিকে ওই হত্যা মামলার প্রধান আসামী জিল্লুর রহমান নিজেকে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে শেরপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসকে ভূল ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে প্রতিবন্ধি কার্ড বাগিয়ে নেয়। সেই প্রতিবন্ধি কার্ড আদালতে উপস্থাপন করে ১৮/১১/২০২১ তারিখে ৩ মাসের জন্য জামিন নেয়। বর্তমানে জামিনে মুক্ত হয়ে আছেন। সে জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে এসেই জিল্লুর রহমান ওই হত্যা মামলার স্বাক্ষী ও আমাদের পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বগুড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ‘ক’ অঞ্চল আদালতে ৫৯৪পি/২০২১(শেরপুর) দন্ডবিধি ১০৭/১১৭ সি ধারার বিধানে চলমান রয়েছে।
নিহত আসাদুল ইসলামের স্ত্রী মনজেরা বেগম আরো বলেন,  হত্যা মামলা প্রধান আসামী জিল্লুর রহমান ও তার স্ত্রী সেলিনা বেগমের দুটো মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। যে মামলা দুটোতে একই ব্যক্তিদের আসামী করা হয়েছে। হত্যা মামলার আসামীরা এমন কথা এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে যে‘ যদি আসাদুল হত্যা মামলাটি টাকার বিনিময়ে তুলে না নেয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পরপর বেশ কয়েকটি মামলা দিয়ে হয়রানি করবো, যাতে করে তারা ওই মামলাটি তুলে নিতে বাধ্য হয়” তাদের এমন আচরণে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন জীবনের নিরাপত্তাহীনতা ভূগছি। সেক্ষেত্রে  ওই হত্যা মামলার আসামীদের পুনরায় জেল হাজতে আটক রেখে প্রচলিত আইনে সাজা প্রদানের রায় তামিলসহ আসামী পক্ষের দায়ের করা মিথ্যা মামলা হতে নিজেদের অব্যাহতি প্রদান ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
error: Content is protected !!