হোম » সারাদেশ » রংপুরে দাম কম থাকায় হিমাগারে পড়ে আছে ৫০ শতাংশ আলু: চিন্তিত চাষীরা

রংপুরে দাম কম থাকায় হিমাগারে পড়ে আছে ৫০ শতাংশ আলু: চিন্তিত চাষীরা

হারুন উর রশিদ সোহেল,রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরে দাম কম থাকায় হিমাগারগুলোতে এখনো প্রায় ৫০ শতাংশ আলু মজুদ রয়েছে। দাম না বাড়লে এই আলুর ভবিষ্যৎ কী হবে কেউ বলতে পারছেন না। বাজারে দাম কম থাকায় অনেকেই হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না। এনিয়ে চাষীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এদিকে অনেক স্থানে আগাম আলু রোপণ শুরু করেছেন চাষিরা। দরপতনের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ায় আলুর দাম কমে গেছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এখনো ৪ মাসের বেশি সময় রয়েছে নতুন আলু উঠতে। তাই দাম বাড়বে। কৃষি অফিস ও হিমাগার মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলে হিমাগার রয়েছে ৩৯টি।

হিমাগারগুলোতে এখনো প্রায় ৫০ শতাংশ আলু মজুদ রয়েছে। গত কয়েক মাসে ৫০ শতাংশ আলু উত্তোলন করা হয়েছে। তথ্য মতে, হিমাগারগুলোতে এখনো প্রায় ২২ লাখ বস্তা (প্রতি বস্তা ৬০ কেজি) মজুদ রয়েছে। দাম না থাকায় আলু তুলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা। রংপুর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, রংপুর জেলায় গত মৌসুমে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ২০ মেট্রিক টন করে আলুর উৎপাদন হয়েছে। এবার কিছুটা বেশি জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। বাজারে আলুর খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা হলেও হিমাগার পর্যায়ে পাইকারি মূল্য ১০ থেকে ১১ টাকা প্রতি কেজি।

তাই ব্যবসায়ীরা ও কৃষকরা হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না। রংপুর নগরীর তামপাট এলাকার নুর ইসলাম ২ একর ও খোর্দ্দ তামপাট এলাকার সিরাজুল শিকদার ৩ একর, পীরগাছা উপজেলার গুঞ্জুর খাঁ এলাকার সাহাবুদ্দিন ও পারুল আর্দশ পাড়ার ফুল মিয়া দুইজন মিলে ৫ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। তারা জানান, প্রতিমণ আলু উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। বর্তমান বাজারে আলুর দাম কম থাকায় তাদের উৎপাদন খরচ উঠছে না। তাই তারা হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না। রংপুর জেলা আলু আড়ৎদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তৈযবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আলুর দর পতনের কারণে তারা হিমাগার থেকে আলু উত্তোলন করেননি। আলুর ভবিষৎ কি হবে বুঝতে পারছেন না।

কাউনিয়া উপজেলার চাষি আফজাল হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাদের এলাকায় অনেকেই আগাম আলু রোপণ করেছেন। রংপুর হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা সোহরাব টিটু বলেন, এখনো অনেক আলু হিমাগারে মজুদ রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আলুর দাম বাড়লে হিমাগার থেকে আলু উত্তোলন করবে সবাই। এব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, নতুন আলু চাষ করতে এখনো ৪ মাসের বেশি সময় বাকি রয়েছে। তাই আলু দাম নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কৃষকরা আলুর ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

error: Content is protected !!