কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের সব চেয়ে আলোচিত টপিক হলো পিঁয়াজের দাম। ৪০ টাকার পিঁয়াজ আমাদের কিনতে হচ্ছে ২০০-২৪০ টাকায়। এখন কথা হলো, কেন এমন হচ্ছে? আচ্ছা এ বিষয়টা ভালো ভাবে বুঝার জন্যই আমি দেশের পিঁয়াজের চাহিদা ও যোগান নিয়ে কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছি। বাংলাদেশে পিঁয়াজের মোট চাহিদা ২৫ লাখ মেট্রিকটন আর এদেশে পিঁয়াজের মোট উৎপাদন ১৭-১৯ লাখ মেট্রিকটন। বাকী ৬-৮ লাখ মেট্রিকটন পিঁয়াজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রতিবেশি দেশ হওয়ায় আমদানিরর ৯৫ % ভারত থেকে করা হয়। কিন্তু গত আগষ্টে ভারতেও পিঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। ফলে ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার ঘোষণা দেয় পিঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৪০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ ডলার করতে।
এমনকি ২৯ সেপ্টেম্বর পুরাপুরি পিঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় দেশের বাজারে ভারতীয় পিঁয়াজের দেখা মিলে না। ফলে দাম বাড়তে শুরু করে। তবুও বাংলাদেশে পিঁয়াজের দাম এত হওয়ার কথা ছিল না! তাহলে কেন এতো বেশি বাড়লো? এদেশের দক্ষ ও অসাধু ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার খবর শুনে অর্থনীতি দুটি ভয়ানক থ্রিউরি #কার্টেল_গঠন ও #অ্যাসেমেট্রিক_ইনফরমেশনের আশ্রয় নিয়ে ন্যাচারাল সংকটের পাশাপাশি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। ফলে রাতারাতি পিঁয়াজের দাম ৩০-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০-২৪০ টাকা হয়ে যায়। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পিঁয়াজ আমদানির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পিঁয়াজের নতুন বাজার খুঁজতে শুরু করে। মিশর, মায়ানমার ও পাকিস্তান থেকে পিয়াজ আসাও শুরু হয়েছে। এই দিকে আমাদের দেশের সোনার ছেলে পিঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় স্টকে জমানো পিঁয়াজ পঁচিয়ে নদীতে ফেলে দিচ্ছে!
গতকাল রাতে টিউশনি করাইয়া ফিরতেছি, এমন সময় রাস্তায় একটা জিনিস বার বার দেখে খটকা লেগে গেল। সিলেটের আম্বখানা থেকে মদিনা মার্কেট ২ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে প্রায় ৮/১০ জন মানুষের হাতে লবণ দেখলাম! রুমে এসে দেখি ফেসবুকেও লবণ! একটু ঘাটাঘাটি করে বুঝতে পারলাম, পিঁয়াজের মতো লবনের দামও নাকী বাড়বে। তাই সবাই লবণ কিনতে দোকানে ভিড় জামাইছে। দোকানদারও ব্যাপারটা বুঝতে পেরে ৪০ টাকার লবণ ১০০ টাকায় বিক্রি শুরু করেছে। আর আমরাও ব্যবসায়ীরা যেভাবে নাচাতে চাচ্ছে, সেভাবে নাচার জন্য সেজেগুজে তৈরি হচ্ছি!
প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অতিরিক্ত উৎপাদনের কারনে লবনের দাম নিয়ে সংকায় কৃষকরা। প্রতি মণ লবণের দাম ২৫০ টাকা থেকে কমে ১৮০ টাকা হয়ে গেছে।তীব্র দাবদাহের কারনে প্রতিদিন লবণ উৎপাদন হচ্ছে ৩০ হাজার মেট্রিকটন, যেখানে আগে হতো ২০ হাজার মেট্রিকটন।
এখন কথা হলো, পিঁয়াজের উৎপাদনে না হয় আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ না, কিন্তু লবণ উৎপাদনে তো স্বয়ংসম্পূর্ণ তাহলে লবনের বাজারে আগুন কেন? এজন্য দায়ী কে? জানেন আপনারা? আমি বলে দিচ্ছি… এজন্য দায়ি আমরাই,
“দেশের নাগরিকদের যদি রাষ্ট্রের কাছ থেকে যাবতীয় সুবিধা ভোগের অধিকার থাকে তাহলে নাগরিকদেরও রাষ্ট্রের প্রতি কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়।
আরও পড়ুন
পদ্মা সেতু উদ্বোধন : ডোমার উপজেলা পরিষদ হলরুমে বড়পর্দায় সরাসরি সম্প্রচার
দাগনভূঞায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ
জীবননগর গোয়ালপাড়ার নাজমুল ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ আটক