হোম » শহর-নগর » আওয়াজ ফাউন্ডেশনের বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত

আওয়াজ ফাউন্ডেশনের বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত

আলী সম্প্রীতিঃ আজ বিশ্বপরিবেশ দিবস। ১৯৭৪ সাল থেকে এই দিবসটি বিশ্বব্যাপি ০৫ জুন পালিত হয়ে আসছে। এরপর হতে প্রতিবছর দিবসটি আলাদা আলাদা ভাবে প্রদিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘‘ প্লাস্টিক দুষণ সমাধানে সামিল হই সকলে”( SOLUTION TO PLASTIC POLLUTION).

আজ ৫ জুন, ২০২৩ বিশ্বপরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে আওয়াজ ফাউন্ডেশন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে – সকাল ১০:০০ ঘটিকা মানববন্ধন ও সমাবেশ আয়োজন করার মাধ্যমে দিবসটি উৎযাপন করে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবদান অনিস্বীকার্য। আওয়াজ ফাউন্ডেশন ২০০৩সাল থেকে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। আজ এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বপরিবেশ দিবস পালনের উদ্দেশ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবি মানুষকে তাদের ভাবনার যায়গায় পরিবেশ নিয়ে চিন্তা ভাবনার জন্য একত্রিত হয়েছে। পরিবেশের জন্য প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূণ, আমাদের সকলের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মের কথাচিন্তা করে পরিবেশ উন্নয়নের জন্য কাজ এখনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী । সমগ্র বিশ্বপরিবেশ বিপর্যয়ের কারনে ঝুকির মধ্যে রয়েছে ।

কোভিড পরবর্তী সময়ে পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবতনের পাশাপাশি মূদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সব মিলিয়ে নিম্ন শ্রেনীর মানুষের এক নতুন সংকট তৈরী হয়েছে, যার ফলে এই শ্রেনীর মানুষ আরো দূর্বল থেকে দূর্বলতর হয়ে পরেছে। পরিবেশ দূষণজনীত সমস্যা উক্ত সংকটের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। কাজেই এই বিপর্যয় রুখে দিতে আমাদের সকলকে সম্মিলিত ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে যাতে করে পরিবেশ আরো বেশী দূষিত না হয়।

এছাড়া বন ভুমির গাছপালা কেটে ফেলা, শিল্প কলকারখানার ধোঁয়া ও দূষিত বর্জ্র পদার্থ প্রকৃতির সাথে মিশে পরিবেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অন্যান্য সকল ক্ষেত্রের মতো পোশাকশিল্পেও পরিবেশ দুশনে প্রভাব বহুদিন ধরে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ধরনের পরিবশ দুষনের ফলে কারখানার আশেপাশে যেসব শ্রমিকরা থাকে তাদের খাবার, তাপমাত্রা ও তাদের পারিপার্শি¦ক পরিবেশ খুবই নোংরা এবং নোংরা পরিবেশের কারনে তারা প্র্য়াশই বিভিন্ন রোগের শিকার হয়। কারখানায় ব্যবহৃত রাসায়নিক বর্জ্য ও অপরিচ্ছন্ন কর্মপরিবেশের দরুন তাদের বিভিন্ন পেশাগত ব্যাধি হয়। এসবের দিকেও মনোযোগী নজর দিতে হবে। তাদের জন্য বাসযোগ্য আবাসস্থল নিশ্চিত করতে হবে। যথাস্থানে কারখানা নির্মান করতে হবে। প্রকৃতি বিনাশ করে এভাবে শিল্প কারখানা ও স্থাপত্য নির্মান এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। সমগ্রবিশে^র পাশাপাশি বাংলাদেশকে ও এখন টেকশই উন্নতির জন্য (Sustainable Development) পরিবেশ রক্ষার কথা ভাবতে হচ্ছে। এছাড়াও গ্রীন ডেভেলপমেন্ট নিয়ে ও পৃথিবীরউন্নত দেশ গুলোও বেশ সোচ্চার এবং অগ্রনী ভুমিকা পারন করছে। বিশ্বে ও উন্ন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও পরিবেশ উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকেও সক্রিয়ভাবে কাজ করে পদোক্ষেপ নিতে ও  টেকসই উন্নয়নের জন্য আজকের মানববন্ধ ও সমাবেশ থেকে শ্রমিকরা পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে বেশ কিছু পদোক্ষেপ সরকারের নিকট বলিষ্ট কন্ঠে উত্থাপন করেন।

পদক্ষেপ সমূহঃ

* পরিবেশ রক্ষায় সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

* গ্রীন ডেভেলপমেন্ট (সবুজীকরন) নিয়ে আর ও কাজ করা।
শিল্প কারখানায় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের দিক নিদের্শনা
সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে, উদাহরণস¦রুপ ইটিপির মাধ্যমে
ময়লা জলনিষ্কাশন করে তাপূনঃ ব্যবহারের উপযোগীকরে
তোলা।

* শিল্প কারখনার বর্জ্র ও রাসায়নিক পদার্থের সুষ্ট ব্যবস্থাপনায়
কার্যকরি সরকারি পর্যবেক্ষন প্রয়োজন।

* পাহাড় ও গাছপালা কেটে, নদী-নালা ভরাট করে শিল্পকারখানা
ও স্থাপনা নির্মান রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে
হবে।

* পরিবেশ আইন অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে
হবে।

* বায়ার ও ব্র্যান্ডকে পরিবেশবান্ধব শিল্পকারখানা তৈরীতে
দায়িত্ব ও গ্রহনের মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

* বায়ার ও ব্র্যান্ডকে পন্যের ও শ্রমের ন্যায্য মূল্য প্রদান করে
পরিবেশ উন্নয়নে সহায়তা করতে হবে।

* প্লাষ্টিক দ্রব্য ব্যবহার রোধে মালিক, শ্রমিক, বায়ার, ব্র্যান্ড,
দেশী-বিদেশী উন্নয়ন সংস্থা ও সরকারÑসকলকে
সম্মিলিতভাবে কাজ করে পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে।

* পরিবেশ বান্ধব ব্যবসানীতি প্রনয়ণ করতে হবে।

* পানি, বিদ্যুত, গ্যাস সর্বপরি প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার্থে
সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।

* বাংলাদেশের মতো তৃতীয়বিশ্বে ফাষ্টফ্যাশন এর জন্য শ্রমিকদের ঝুকিঁপুর্ন কাজ বন্ধ করার মাধ্যমে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য সুষ্ট কর্মপরিবেশ           তৈরী করতে হবে।

* পরিবেশ দুষনের ফলে শ্রমিকরা যেসব স্বাস্থ্য হানির স্বীকার হচ্ছে তা রোধকল্পে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি জনাব মমতাজ বেগম, সাধারনসম্পাদক ও নির্বাহী পরিচালক জনাব নাজমা আক্তার, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক খাদিজা আক্তার, আরএমজি ফোরামের সভাপতি জনাব লিলি বেগম ও সাধারন সম্পাদক উর্মি আক্তার সহ বিভিন্ন কারখানার ইউনিয়নের শ্রমিক নেত্রীবৃন্দ। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়াজ ফাউন্ডেশন আরো অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

 

 

 

error: Content is protected !!