হোম » প্রধান সংবাদ » জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কিছুক্ষণ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কিছুক্ষণ

মোঃ ইমরানুল হক: গত ১৭ই মার্চ ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুংগীপাড়ার এক সম্ধসঢ়;ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ মিশনারী হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৪৪ সালে কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৪৭ সালে বি,এ পাশ করেন। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতীতে জড়িয়ে পড়েন। কোলকাতায় থাকাকালীন সময়ে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাষানী ও শেরে বাংলা এ,কে,ফলুল হক এর একান্ত সান্নিধ্যে আসেন। রাজনৈতিক কারণে তাকে ১৯৩৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত মোট ৪৬৪৫ দিন কারাবরণ করতে হয়।

তিনি ১৯৬৬ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে ঐতিহাসিক ৬ দফা পেশ করেন এবং তৎকালীন আইয়ুব সরকারের রোষাণলে পরে কারাবরণ করেন। ১৯৬৯ সালের ২২শে ফেব্র“য়ারি এক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তিনি মুক্তি পান। ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে সাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেফতার করেন। ইতিমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

পরবর্তিতে ৯ই জানুয়ারি ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১০ই জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে আগমন করেন। তিনি ১৯৭২ সালের ১২ ই জানুয়ারী দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। পরবর্তিতে তিনি ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারী প্রেসিডেন্ট হন। উলে­খ্য যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট একদল বিপথগামী সেনাদের দ্বারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্মমভাবে নিহত হন। এই হত্যাকান্ডের মাধ্যমে দেশ চিরতরে হারালো শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির অভিভাবক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ভারতীয় উপমহাদেশের খ্যাতনামা রাজনীতিবীদ “দেশবন্ধ” চিত্তরঞ্জন দাসের মহাপ্রয়াণে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর শোকবানীতে বলেছিলেন, “এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ, মরণে তাহাই করে গেলে দান”।

রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে কাপুরুষ নরাধমদের গুপ্ত হামলায় নিহত স্বাধীন বাংলার স্থপতি বিশ্বনন্দিত বঙ্গবন্ধুর মহাপ্রয়াণে হয়তো ঐ একই কথা লিখতেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতোনা। তাই স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টির পেছেনে বঙ্গবন্ধুর অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি বাঙ্গালী জাতির গর্ব ও শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী। বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার প্রকৃতির জনদরদী নেতা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর মহানুভবতায় অগনিত স্বাধীনতাবিরোধী লোক বিনা বিচারে মুক্তি লাভ করে। কিন্তু ওরা কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ না হয়ে তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও তিনি কখনো কঠোর নিরাপত্তায় থাকতেন না।

তিনি বলেছিলেন “বাংলাদেশের মানুুুষ আমাকে মারতে পারেনা, তোমরা নিশ্চিত থাক”। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ ইং তারিখে স্বদেশী ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে তিনি নির্মমভাবে শহিদ হন। তিনি যে একজন নির্ভিক, সহজ সরল, উদার মনের মানুষ ছিলেন তার উজ্জল প্রমাণ পেয়েছিলাম। ১৯৭২ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তাঁর সাথে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে। যে রাজনৈতিক কারণে বঙ্গবন্ধুর সাথে আমার পিতা মরহুম সাঈয়েদুল হক এর সুসম্পর্ক ছিল তিনি ১৯৪৫ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অধ্যায়নকালীন সময় থেকে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সান্নিধ্যে থেকে ছাত্র রাজনীতি এবং পরবর্তিতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন।

পরবর্তিতে তিনি সাংবাদিকতা করেছেন। ১৯৫৮ সালে “সাপ্তাহিক নবজাত” ও ১৯৬২ সালে দৈনিক “নবজাত” নিজস্ব সম্পাদনায় প্রকাশ করতেন। কিন্তু তৎকালীন আইউব – মোনায়েম সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখি ও সংবাদ প্রচারের অপরাধে উক্ত সরকারের রোষাণলে পড়ে নানা অত্যাচার অবিচারের সন্মুখীন হন। ফলে পত্রিকাটি নিয়মিভাবে প্রকাশনায় বাধাগ্রস্থ হয়। সরকার কর্তৃক জরিমানা, মামলা মোকদ্দমা করার ফলে তিনি আর্থিকভাবে প্রচুর ক্ষতিগ্রস্থ হন। এভাবে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটির প্রকাশনায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। ১৯৭২ ১লা এপ্রিল হতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগীতায় পত্রিকাটি পুনরায় প্রকাশ করা শুরু করেন।

আমি তখন জগন্নাথ কলেজে বি,এসসি পড়ি। পড়াশুনার পাশাপাশি পত্রিকার কাজেও সহযোগীতা করতাম। পত্রিকার প্রচারণা, সংবাদ সংগ্রহ, সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকা ইত্যাদি কাজ করতাম। এছাড়া পত্রিকার পক্ষথেকে রাষ্ট্রিয় অনেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতাম। মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সরাসরি সাক্ষাতের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল। ইতিপুর্বে পল্টন ময়দান ও সোহ্ধসঢ়;রাওয়ার্দী উদ্যানে বিভিন্ন জনসভায় বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। কিন্তু কাছাকাছি থেকে তাঁকে দেখার বা কথা বলার সুযোগ কখনো হয়নি। ১৯৭২ সালের ১৫ই জুলাই তারিখে আমি কাক্সিক্ষত সেই সুবর্ণ সুযোগ পেলাম আমার পিতার সৌজন্যে।

তিনি ১৪ই জুলাই রাতে আমাকে ডেকে জানালেন যে, ‘আগামীকাল সকালে নবজাত পত্রিকার কিছু কপি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসায় যেতে হবে এবং তাঁর হাতে পত্রিকার কপি দিতে হবে’। আমিতো একথা শুনে হতভম্ব! এ কি করে সম্ভব? প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করা আমার মতো সাধারণ ছাত্রের পক্ষে অত সহজ ব্যাপার! তিনি আমাকে অভয় দিয়ে বললেন, ‘কোন সমস্যা হবেনা। তুমি কাল সকালেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডস্থ তার বাসায় চলে যাও।্#৩৯; ১৫ ই জুলাই সকালে আমি “দৈনিক নবজাত” পত্রিকার কিছু কপিসহ ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে প্রধানন্ত্ররীর বাসভবনের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। উক্ত দিেেনর নবজাত পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ একটি গুরুত্বপুর্ণ খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

আমি বেলা দশটার দিকে বাড়ীর গেটের সিকিউরিটির কাছে জানালাম যে, আমি “দৈনিক নবজাত” পত্রিকার পক্ষথেকে বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছি। তারা আমাকে প্রধানমন্ত্রীর পি,এস সাহেবের নিকট পাঠিয়ে দিলেন। আমি পি,এস সাহেবের নিকট আমার অভিপ্রায় জানালে তিনি আমাকে একটু অপেক্ষা করতে বলেন। তিনি টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রীর সংগে আলাপ করে নিলেন। সেদিন অন্য কোন সাক্ষাৎ প্রার্থী ছিলনা। তাই মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই আমি বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের অনুমতি পেলাম।

দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে এত সহজে সাক্ষাৎ করা যায় তা আমার মোটেই ধারনা ছিলনা। তাই আমি নিজেকে গর্বিত মনে করলাম। আমি পি,এস সাহেবকে অশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত কামরায় প্রবেশ করলাম। একটু ভয়ও পাচ্ছিলাম যে, তিনি কি না কি বলেন? আমি একজন নগন্য ছাত্র মানুষ। একজন মহান নেতার মুখোমুখি হওয়াতো সহজ ব্যাপার নয়। যাইহোক, একটু ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকে সালাম দিয়ে তাঁর সামনে দাড়ালাম। আমি “নবজাত” পত্রিকা থেকে এসেছি। উক্ত পত্র্রিকার সম্পাদক জনাব সাঈয়েদুল হক আমাকে পাঠিয়েছেন এবং আমি তাঁর ছেলে জানালাম। বঙ্গবন্ধুর হাতে পত্রিকার কিছু কপি দিলাম। তিনি হাসিমুখে আমাকে বসতে বললেন। তিনি মনোযোগ সহকারে পত্রিকাটি দেখছিলেন। এই কামরাটি ছিল বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত বসার ঘর। বঙ্গবন্ধু লুঙ্গী ও পাঞ্জাবী পরিহিত অবস্থায় একটি ইজি চেয়ারে বসা ছিলেন।

কামরাটিতে অত্যন্ত সাধারণ মানের ফার্নিচার দিয়ে সাজানো ছিল। একদিকে একটি বিশাল আলমারীতে বেশ কিছু
বই পুস্তক ছিল। দেয়ালে কিছু পুরানো দিনের পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবনের ছবি। কিছুক্ষণ পর তিনি আমার নাম, কোথায় এবং কোন পর্যায়ে লেখাপড়া করি ইত্যাদি জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। এছাড়া তিনি আমার পিতার ও পারিবারিক খোঁজখবর নিলেন। নবজাত পত্রিকারও খোঁজখবর নিলেন। পত্রিকা কেমন চলছে জানতে চাইলেন। আমি অত্যন্ত সহজভাবে সব জবাব দিলাম। তিনি আমাকে মনোযোগের সহিত পড়াশুনা করার পরামর্শ দিলেন।

বঙ্গবন্ধুর রুমের মাঝখানে পর্দার ওপাস থেকে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ও ছোট ছেলে শেখ রাসেলের কন্ঠস্বর শোনা যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে রাসেল এসে বঙ্গবন্ধুর কাছে বসলো। তিনি তাকে আদর দিলেন। উলে­খ্য যে, উক্ত সময়ে তাঁর রুমে আমি একাই ছিলাম। অন্য কোন দর্শনার্থী ছিলনা। মনে হচ্ছিল প্রধানমন্ত্রী নয়, একজন সাধারণ মানুষের বাসায় এসে কথা বলছি। তিনি একজন উদার, সহজ সরল ও সাধারণ মনের মানুষ তা আগে অনেক শুনেছি। এর বাস্তব প্রমান পেলাম তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করে। তিনি আমার মতো একজন সাধারণ ছেলের সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দিলেন। তা আমার জীবনের একটা স্মরনীয় ঘটনা। আমি যে পত্রিকা তাঁর হাতে দিতে গিয়েছিলাম তা হয়তো তার পি,এস সাহেব রেখে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে পৌছে দিবেন বলে জানাতে পারতেন।

তিনি তা না করে আমাকে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দিলেন। এরজন্য আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান ও গর্বিত বলে মনে করি। তিনি যে এত সহজ সরল ও আন্তরিক তা তাকে সামনাসামনি না দেখলে এবং কথা না বললে কেউ অনুধাবন করতে পারবেননা। বঙ্গবন্ধুকে সর্বশেষ দেখেছিলাম ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক সোরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল জনসভায়। এছাড়া আরোও কিছু জনসভায় দেখেছি। কিন্তু কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য কখনও হয়নি। আজ সেই মহাপুরুষ শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সান্নিধ্যে এখন আমি।

যা ছিল কল্পনাতীত। আমি প্রায় ১৫/২০ মিনিট তাঁর কাছে বসা ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর সহজ সরল, আন্তরিক ও উদার মনের কথাবার্তায় আমি একটুও বিচলিত হইনি। মনেই হয়নি আমি একজন প্রধানন্ত্রীর সাথে কথা বলছি। তিনি একজন বিশাল মনের মানুষ ছিলেন। মানুষকে তিনি সহজেই আপন করে নিতে পারতেন। আমার ইচ্ছা হচ্ছিল তাঁর কাছে আরোও কিছুক্ষণ থাকার। কিন্তু তিনি অনেক ব্যস্ত মানুষ। আরোও অনেকে হয়তো তাঁর সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছে। তাই আমি বঙ্গবন্ধুর পায়ে শ্রদ্ধার সহিত সালাম করে বিদায় নিয়ে আসলাম। বঙ্গবন্ধুর সাথে ক্ষণিকের এই সাক্ষাতের স্মৃতি এখনো চোখে ভাসে।

কিন্তু তার এই উদারতা, মহাভুবনতা ও সহজ সরল জীবন যাপনই এক সময় কাল হয়ে দাড়াল। অচিরেই হারাতে হলো একজন দেশপ্রেমিক, জনদরদী ও উদার মনের মানুষ শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জাতির জনকের মৃত্যুতে দেশের জনগণ ও তাঁর অনুসারীরা ব্যথিত হলেও তাদের শান্তনা এই যে, বঙ্গবন্ধু চরম মুুুল্য দিয়েই অমরত্ত লাভ করেছেন। সাধাররনভাবে মৃত্যুবরণ করলে হয়তো যুগ-যুগান্তরব্যাপী তিনি অমর হয়ে থাকার সৌভাগ্য লাভ করতেননা। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই। তবুও তিনি আমাদের মাঝে আছেন ও থাকবেন মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে। যতদিন এ দেশ থাকবে ততদিন তিনি থাকবেন জনদরদ, দেশপ্রেম ও বীরত্তের উৎস হয়ে।

-লেখক একজন প্রাবান্ধিক ও জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত এজিএম।

error: Content is protected !!