হোম » প্রধান সংবাদ » সিরাজগঞ্জে ২ আ’লীগ নেতাকে অব্যাহতিতে ত্যাগী ও বঞ্চিতদের উল্লাস

সিরাজগঞ্জে ২ আ’লীগ নেতাকে অব্যাহতিতে ত্যাগী ও বঞ্চিতদের উল্লাস

হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত ম্পাদককে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ায় পুরো জেলাজুড়ে দলের বঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের আনন্দ ও উল্লাস শুরু হয়েছে। তৃণমুল থেকে গড়ে উঠা ব্যক্তিরা নতুন নেতৃত্বে আসায় তাদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে।
দূর্যোগ মুহুত্বে দলীয় প্রধানের এই যুগান্তকারী পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই।

চলছে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টি বিতরণ, ভুরিভোজ, আতসবাজি ও নানা আনন্দ-উল্লাস। রোববার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপিকে অব্যাহতি দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ কে.এম হোসেন আলী হাসানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং আব্দুস সামাদ তালুকদারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। দুুপুরে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই জেলাজুড়ে শুরু হয় আনন্দ-উল্লাস। জেলা সদর ছাড়াও বেলকুচি, সলঙ্গা, শাহজাদপুর ও রায়গঞ্জসহ অন্যান্য উপজেলার নেতাকর্মীরা মেতে উঠেন আনন্দে।

সন্ধ্যায় নবনির্বাচিত নেতাদের শুভেচ্ছা জানাতে বিভিন্ন উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে আসতে থাকেন। এসময় আয়োজিত মতবিনিময় নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ কে.এম হোসেন আলী হাসান বলেন, দীর্ঘদিন পর দল শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। আমরা এখন মুক্ত। দলীয় অফিস এখন আর বন্ধ থাকবে না। নিয়মিত খোলা হবে, রাজনৈতিক সকল কর্মকান্ড অফিস থেকেই পরিচালিত হবে।

 

কোন বাড়ি থেকে নয়। দলের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের মনের ভাষা বুঝতে পেরেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সময়পযোগী এই সিদ্ধান্তের কারনে দল আবার চাঙ্গা হবে। আমরা সবাইকে নিয়েই এ কাজগুলো করতে চাই। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। নতুন ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, এই দায়িত্ব আমাদের জন্য পরীক্ষা। পুরো জেলাজুড়ে ত্যাগী ও বঞ্চিতদের নিয়ে দলকে সচল করতে হবে। সভানেত্রী যে বিশ্বাস নিয়ে আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন আমরা তার মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করবো।

 

এজন্য ভারপ্রাপ্ত সভাপতির মত তিনিও সবার সহযোগিতা কামনা করেন। সভায় অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাও বক্তব্য রাখেন। তারা নতুন নেতৃত্বেকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দলের সভানেত্রীর সময়পযোগী সিদ্ধান্তে দল আবার চাঙ্গা হবে। যাদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন তারা দুজনেই তৃণমূল থেকে উঠে আসা রাজনীতিবিদ।

 

সকল আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন তারা। ২ নেতাকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সুর্য্য ও প্রচার সম্পাদক শামসুজ্জামান আলো বলেন, দীর্ঘদিন একক সিদ্বান্তে দল চালানো হয়েছে, এ সময়ে দলীয় কোন্দলের কারনে ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয় হত্যাকান্ড, বেলকুচিতে পরপর কয়েকটি সংঘর্ষসহ জেলাজুড়ে নানা বিতর্কিত ঘটনার কারনে দল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বঞ্চিত হয়েছে ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

 

 

পক্ষান্তরে দলে হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারীতে ভরে গেছে। এ অবস্থায় নেতৃত্ব পরিবর্তনের এ সিদ্বান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা। এদিকে, আজও (সোমবার) জেলা উপজেলা, ইউনিয়নসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সম্পাদককে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেছেন। নুতন নেতারা সকালে ঘুম থেকে উঠেই সিনিয়র নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সম্পাদক। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন আয়োজিত সভা ও মাস্ক বিতরণ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন এবং বিকেলে জেলা আওয়ামীলীগ অফিসে দলের কার্য্যনির্বাহী প্রথম সভাও করেছেন তারা।

error: Content is protected !!