হোম » প্রধান সংবাদ » সিরাজগঞ্জে মুহুর্তের মধ্যে নদী গর্ভে চলে গেল প্রায় শতাধিক বাড়ীঘর

সিরাজগঞ্জে মুহুর্তের মধ্যে নদী গর্ভে চলে গেল প্রায় শতাধিক বাড়ীঘর

হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন। এতে প্রায় ৭০ মিটার বাধ ও শতাধিক বাড়ী ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। মুহুর্তের মধ্যে নদী গর্ভে চলে গেল প্রায় শতাধিক বাড়ীঘর। ভাঙ্গনের ফলে হুমকীর মুখে পড়েছে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের সহ¯্রাধিক বাড়ি-ঘর। শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার সিমলা ও পাঁচঠাকুরি এলাকার প্রায় ৭০ মিটার বাধ গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি ও অবহেলার কারনে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।

ভাঙনকবলিতরা অভিযোগ করে বলেন, সঠিক রক্ষানা-বেক্ষনের অভাবে সিমলা-পাঁচঠাকুরী স্পারে ১ জুন ধ্বস নামে। প্রায় ৭০ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বালির বস্তা ফেলে কোন রকমে বাঁধটি সংস্কার করা হলেও তিন সপ্তাহের মাথায় স্পারের মুল স্যাংকসহ অধিকাংশ এলাকা নদী গর্ভে চলে যায়। এর পর থেকেই মাঝে মাঝে এই এলাকায় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে থাকে একর পর এক বাড়ি ঘর ও স্থাপনা।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল শুক্রবার দুপুরে হটাৎ করে শুরু হয় ভয়াবহ ভাঙ্গন। শনিবার দুপুর পর্যন্ত শতাধিক বাড়ি-ঘর, মসজিদ, আসবাবপত্র, গবাদি পশু, ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় ভাঙ্গন কবলিতদের আহাজারি ছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না। ঘড়বাড়ি রেখে জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছেন অনেকে। ভাঙ্গন আতংকে ঘড়বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অনেকে। যমুনার আকস্মিক ভাঙ্গনে সহায় সম্বল আর মাথাগোজার শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে অসহায় মানুষগুলো আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের খোলা আকাশেরে নিচে, এ যেনো এক অবর্ননীয় দুর্ভোগ। এমন তীব্র ভাঙ্গন এর আগে কখনো দেখেনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারনে এই এলাকা শেষ হয়ে গেলো। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি সময়মত কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহন করতো তাহলে এই ধ্বংসলীলা দেখতে হতো না।

ছোনগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল আলম জানান, সিমলা এলাকায় ব্যাপক নদীভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত দুদিনে শতাধিক ঘরবাড়ি, মসজিদ, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, সিমলা স্পার বাঁধটি নদীতে বিলীন হওয়ায় যমুনার ¯্রােত গতি পরিবর্তন করে সরাসরি বাঁধে আঘাত করছে। এ কারণে হঠাৎ করেই ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে দ্রুত বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করা হবে।

সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ জানান, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের আপাতত নিরাপদ স্থানে রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

এই ঘটনায় শনিবার রাত ৩টার সময় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে আজ বেলা ১১ টার দিকে সিমলা এলাকায় পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার অসীম কুমার প্রমুখ।

error: Content is protected !!