হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : শুক্রবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সদরে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার পাল্টাপাল্টি সংবাদ সন্মেলন করেছে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রুমানা মাহমুদের হোসেনপুরের বাসভবনে এবং ১২টার দিকে একই আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ডা: হাবিবে মিল্লাত মুন্না জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলন করেন। সংবাদ সন্মেলনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, আমি বাসায় অবস্থান করাকালীন শুক্রবার বিকেল থেকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে আইন শৃংখলা বাহিনীর সামনেই সশ্রস্ত্র অবস্থায় বিএনপি কার্যালয়ে সামনে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করার পর ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসের আলোচনা সভায় অংশ নেয়ার জন্য সন্ধ্যায় দলীয় অফিসে যাচ্ছিলাম।
ইসলামিয়া কলেজ এলাকায় যাবার পরই পুলিশ আমাদের উপরে অর্তকিত হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। আমি শরীরের ৫টি স্থানে স্প্রিন্টার বিন্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যাই। পাশাপাশি মহিলা দলের নেত্রী মেরিনা, বিএনপি নেতা সুইট, ছাত্রদলের জুনায়েত ও জয়সহ অন্তত: ২০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ৩জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬জনকে। এ ঘটনার জন্য দায়ী করে তিনি সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী, সদর থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ ও পরিদর্শক তদন্ত রফিকুল ইসলামের অপসারন দাবী করেন এবং জেলা রিটানিং অফিসারকে বিষয়টি মৌখিক ভাবে অবগত করেছেন বলে সংবাদ সন্মেলনে জানান তিনি। এছাড়াও তিনি সিরাজগঞ্জ-৩, ৪, ৫ ও ৬ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের উপরে হামলা, বসতবাড়ি ভাংচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করেন রুমানা মাহমুদ।
অপরদিকে, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ডা: হাবিবে মিল্লাত মুন্না সংবাদ সন্মেলনে বলেন, পুলিশের উপরে অর্তকিত হামলায় তাদের ৪জন সদস্য আহত হয়েছেন। আওয়ামীলীগের কোন নেতাকর্মী সেখানে ছিল না। সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের জন্য তারা সংবাদ সন্মেলন করেছে। ঘটনার দিন পুলিশ সুপার সিরাজগঞ্জে ছিল না। অথচ তাকে বির্তকিত করার জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। আমরা বিএনপি বিরুদ্ধে কিছু করছি না। অথচ তারা আমাদের পোষ্টার ছিড়ে ফেলছে, হিন্দু সমর্থকসহ অন্যান্য নেতাদের বসতবাড়ি ভাংচুর ও বোমা হামলা করছে। এ সকল ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবী করেন হাবিবে মিল্লাত মুন্না।
বিএনপির সংবাদ সন্মেলনে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার, বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান লেবু, সাইদুর রহমান বাচ্চু, আবু সাঈদ সুইট, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, নুর কায়েস সবুজ, রকিবুল হাসান রতন, মির্জা মোস্তফা জামান, হারুন অর রশিদ খান হাসান, অমর কৃষ্ণ দাস ও এ্যাড: মীল রুহুল আমিন বাবুসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামীলীগের সংবাদ সন্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম খান, এ্যাড: কে,এম হোসেন আলী হাসান, নারী এমপি সেলিনা বেগম স্বপ্না, মোস্তফা কামাল খান, আব্দুস সামাদ তালুকদার, আব্দুল বারী সেখ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সন্তোষ কুমার কানু, বতসবাড়িতে হামলার শিকার জগদীশ চন্দ্র সাহা ও মারপিটে আহত সানোয়ার হোসেন ছানুসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী বলেন, উস্কানীমূলক ভাবে পুলিশ কিছু করেনি। বরং পুলিশের উপরে হামলা করার পর জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেছে। এ ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে।