মোঃ মোজাম্মলে ভূইয়া: সহকর্মীকে লাঞ্চিত করার ঘটনায় মাইকে বলে ও সহকর্মীর পায়ে ধরে মাফ চেয়ে রক্ষা পেয়েছেন যুগান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া প্রতিনিধি মো. মহিউদ্দিন মিশু। গতকাল শুক্রবার দুপুরে আখাউড়ার উন্নয়ন মেলায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে উত্তেজিত ক্ষুব্দ জনতা তাকে ধাওয়া করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে গিয়ে তিনি নিজেকে রক্ষা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউএনও’র আমন্ত্রনে আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আরিফুল আমীন, আখাউড়া শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মো. আমজাদ হোসেন ও কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু উন্নয়ন মেলার স্টলের বিচার কাজ করছিলেন। উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে বিচার কাজ করার সময় যুগান্তরের সাংবাদিক মহিউদ্দিন মিশু হুট করে কালের কণ্ঠের সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে অশালীন কথাবার্তা শুরু করে। এক পর্যায়ে ওই দুই বিচারকের সামনেই কালের কণ্ঠের সাংবাদিককে লাঞ্চিত করে। উপস্থিত লোকজন এগিয়ে এসে মহিউদ্দিন মিশুকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। এ সময় তিনি আরো উত্তেজিত হয়ে বিশ্বজিৎ পালকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেন। উপস্থিত লোকজন এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে মিশু দৌঁড়ে পালায়। এক পর্যায়ে তিনি ইউএনও’র কার্যালয়ে গিয়ে ভেতর থেকে আটকে দেন। পরে প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়। উন্নয়ন মেলার মাঠে এসে মহিউদ্দিন মিশু সবার সামনেই বিশ্বজিৎ পাল বাবু’র পায়ে ধরে মাফ চায় ও অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার জন্য মাইকে দু:খ প্রকাশ করে।
বিশ্বজিৎ পাল জানান, কালের কণ্ঠের সেরা জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় স্থানীয় সাংবাদিকরা একটি সংবর্ধনার আয়োজন করে। এ সময় মিশুকে সংবর্ধনার দেয়ার জন্য দাবি তুললে কেউ তাতে রাজি হন নি। এর পর থেকেই তিনি অন্যান্য সকল সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হন। অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে তিনি এ নিয়ে অশোভন আচরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘মূলত সে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এ কাজটি করেছে। আমরা ওই স্টলে যাওয়ার মাত্রই সে আরেজনকে নিয়ে সেখানে ঢুকে। তবে এ ঘটনায় তাকে মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছি। বলেছি সঠিক সাংবাদিকতার পথে যেন সে চলে। কেননা, সাংবাদিকতা বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় তার যদি শিক্ষা হয় তাহলে আমাদের সবার জন্য মঙ্গল। যেহেতু সে দেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকায় আছে সেহেতু সঠিক সাংবাদিকতার পথটাই বেছে নিক। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আরিফুল আমীন জানান, সাংবাদিক প্রতিনিধিসহ সকলের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুন্দরভাবে মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। ইউএনও মোহাম্মদ শামছুজ্জামানও একই কথা বলেছেন।